বিষয়ঃ রমাদানুল মুবারক, পরিকল্পনা ও কিছু কথা লেখকঃ তালহা যুবায়ের পর্বঃ ০১
মাহে রমাদান, মুমিন জীবনে এক প্রশান্তির নাম, এক রহমতের নাম, এক ঐশী আলোকছটা আর পবিত্র আনন্দে নেচে উঠার নাম। তাইতো গীতিকার তফাজ্জল হোসাইন খান মনের আনন্দ মিশিয়ে লিখেছিলেন "আকাশে মেঘের দেশে বাঁকা চাঁদা মুচকি হাসে আনন্দে নেচে উঠে তাইতো সবার প্রাণ নাজাতের বাণী নিয়ে এলো রে রমজান"।
বছর ঘুরে আবারো রমজান কড়া নাড়ছে আমাদের দরজায়। হয়তো হ্যাপি রমাদান লিখে ফেসবুকে পোস্ট করা বা নিজের অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে রমাদান পোস্টার, ক্যালেন্ডার বের করা কিংবা কয়টা ইফতার পার্টি করবো সবগুলো সার্কেল মিলিয়ে অথবা ঈদে বাচ্চা, ভাই-বোন, বাবা-মা, স্ত্রীর জন্য কি কি মার্কেট করবো তাও ঠিক করে ফেলেছি আমরা কিন্তু যেই নাজাতের পবিত্র বানী নিয়ে, মুক্তির বারতা নিয়ে এসেছে রমাদান, তার জন্য কি পর্যাপ্ত প্রস্তুতি কিংবা পরিকল্পনা নিতে পেরেছি আমরা? আচ্ছা, আপনার হয়তো মনে হতেই পারে যে প্রস্তুতি কেনই বা নিতে হবে? আল্লাহ হাদীসে কুদসিতে সাওম বা রোজা নিয়ে বলেন “ সাওম আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দিবো”(১)। যেখানে আল্লাহ নিজে প্রতিদান দিতে চেয়েছেন তার জন্য কি একটুও প্রস্তুতি নিবো না আমরা ? অথচ সাধারন একটা বিয়ের অনুষ্ঠান অথবা পরীক্ষার আগে কতগুলো দিন ধরে ঘুম হারাম হয়ে যায় প্রস্তুতির জন্য অথচ এটি মানব জীবনের সবথেকে বড় পুরস্কারের সম্ভাবনার হাত বাড়াচ্ছে। চলুন দেখি রাসূল (সঃ) কি করেছেন।
”আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসে লাগাতার রোজা রাখতেন, আমরা বলতাম, তিনি আর রোজা ছাড়বেন না। আবার তিনি এভাবে রোজা ছাড়তেন, আমরা বলতাম, তিনি আর রোজা রাখবেন না। আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে রমজান ছাড়া কোনো পুরো মাসের রোজা পালন করতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে কোনো মাসে বেশি রোজা পালন করতে দেখিনি।”(২)
তাহলে আয়েশা (রাঃ) এর হাদীস আমাদের বলে গেলো যেই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) সারা বছরই সর্বোচ্চ ইবাদত আর বিরতি দিয়ে দিয়ে রোজা রেখে অভ্যস্ত তিনি পর্যন্ত রোজার প্রস্তুতিকে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। সুতরাং ভুল করতে করতে অন্তরে কালিমা লেপন করা আমাদের কি করা উচিত তা তো সকলেই বুঝতে পারছি। আমাদের সেই বুঝতে পারাকে বাস্তবায়ন করতে উৎসাহ দিতেই গীতিকার বেলাল হোসাইন নূরী হৃদয়ের সব আবেগ দিয়ে লিখেন "সিয়াম এলো খুলে দাও তুমি দিল নিজেকে গোছাও তুমি আজ তিল তিল"। আমরা আধুনিক, পুঁজিবাদী ও স্যোস্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও এ বছরের রমাদানকে কি করে ফজিলতপূর্ন ও বরকতপূর্ণ করে তুলতে পারি তার প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও আমলরে উপায় নিয়ে এগিয়ে যাবো।
আমরা প্রধানত ৩ টি ভাগে ভাগ করবো আমাদের আলোচনা:
ব্যক্তিগত প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও আমল
পারিবারিক প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও আমল
সামাজিক প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও আমল
(চলবে)
তথ্যসুত্র:
১: সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫১/১৬৫
২: সহিহ বুখারি, হাদিস ১৮১৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস ২৫৭০
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন